কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং পুলিশ ফাঁড়ীর ক্যাশিয়ার খ্যাত কনষ্টেবল মোস্তাফিজের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে হারবাংসহ আজিজনগর এলাকার ব্যবসায়ী ও চকরিয়ার বিভিন্ন সড়কে চলাচলরত গাড়ীর ড্রাইভার। ৬ মাস পূর্বে পুলিশ ফাঁড়িতে যোগদানের পর থেকে ক্যাশিয়েরের দায়িত্ব রয়েছেন তিনি। সুত্রে জানা গেছে, হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির কনষ্টেবল মোস্তাফিজ চকরিয়ার বিভিন্ন স্পটে গিয়ে নিজেকে দারোগা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করে।
এলাকার সচেতন লোকজনের মাঝে প্রশ্ন সে কি সাধারণ কনষ্টেবল নাকি দারোগা মোস্তাফিজ? হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাশিয়ার নামধারী এ কনষ্টেবলের ব্যাপক চাঁদাবাজিতে অতীষ্ট হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ লোকজন। কনষ্টেবল মোস্তাফিজ হারবাং পুলিশ ফাঁড়িতে যোগদানের পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে বদলী হয়নি অদৃশ্য কারনে। সে যে কোন ভাবে উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে অন্যান্য কনষ্টেবল বেশ কয়েক বার বদলী হলেও সে বদলী ঠেকিয়ে তার চাঁদা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে অবাদে।
যেখানে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রনে পুলিশ কাজ করে, সেখানে এই ক্ষমতাধর কনষ্টেবল ক্যাশিয়ার ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম। তার বেপরোয়া চাঁদাবাজি থামাবে কে? জনমনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
স্থানিয়রা জানিয়েছে, হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এস.আই দেবাশীষ ইউনিয়নে মাদক ব্যবসার হাট স্থাপনের সুযোগ দিয়ে ফাঁড়ির ক্যাশিয়ারের মাধ্যমে নিজে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ-লাখ টাকা।
বিভিন্ন থানায় মামলার আসামী, মাদক ব্যবসায়ী ও কারিগরদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা নেওয়ার কারনে আইসি দেবাশীষ ও কনষ্টেবল মোস্তাফিজ হারবাং পুলিশ ফাঁড়িতে পোষ্টিং নেওয়ার পর অদ্যবদি মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের তথ্য গোপন রেখে ও অভিযান না করে অপরাধীদের রক্ষা করে চলেছে । এ কারনে কোন সময় থানা কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে মাদকসহ কোন অপরাধিকে আটক করতে পারেনি থানা পুলিশ । তবে মাঝে মধ্যে র্যাবের পরিচালিত অভিযানে কোটি টাকার মাদক দ্রব্য আটক করা হলে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ি কর্তৃক বড় ধরনের কোন অভিযান পরিচালনা হয়নি অদ্যবদি।
এস.আই দেবাশীষ হারবাং পুলিশ ফাঁড়িতে যোগদানের পর থেকে এলাকার আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছেন চাঁদাবাজিতে। তার বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে এলাকার সকল শ্রেণীর পেশার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। ঠুকনো অপরাধে এলাকায় সম্মানি লোকজন ধরে এনে ফাঁড়িতে আটক রেখে মামলায় জড়িয়ে থানায় সোপর্দ্দ করার হুমকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। তার এসব কাজে স্থানিয় কিছু দালাল প্রকৃতির লোক জড়িত রয়েছে বলে দাবী করেছেন স্থানিয়রা।
অপরদিকে ক্যাশিয়ারের অঘোষিত লাইন্সে হারবাং মগপাড়া, মদের ডিফোখ্যাত আজিজ নগর মগপাড়া এলাকায় মাদকের ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠেছে। এসব এলাকায় ২০/২৫টি স্পটে হাত বাড়ালেই ইয়াবাসহ মরণনেশা মাদক পাওয়া যাচ্ছে। একটি প্রভাবশালী চক্র এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার মাদক বাণিজ্যে জড়িত। চকরিয়ার বদরখালী, পেকুয়া, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, পটিয়া ,রাউজানসহ চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্পটে তারা পাচার করছে মাদকদ্রব্য। অভিযোগ রয়েছে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি ও ক্যাশিয়ারের যোগসাজসে মাদক পাচার অব্যাহত রয়েছে এখানে। বর্তমানে ইয়াবা,হিরোইন,গাঁজা, আফিন, বার্মিজ মদ রাম, কান্ট্রি, বিয়ারসহ নানা মাদকদ্রব্যের আস্তানায় পরিণত হয়েছে হারবাং সহ আজিজ নগরের প্রত্যন্ত এলাকায়
হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি দেবীশীষের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রিয় চট্টগ্রামকে বলেন, হারবাং পুলিশ ফাঁড়ি কোন সদস্য মাদকের স্পর্ট থেকে চাঁদাবাজির সাথে জড়িত নাই।
চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মাদক দ্রব্যের ব্যাপারে কোন ছাড় নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে মাদকের ব্যাপারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।। কক্সবাজার জোষ্ঠ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল-চকরিয়া) মোহাম্মদ মাসুদ আলম বলেন, মাদক পাচারের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে নির্দেশ দেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: